থিংক  ডিফারেন্ট

সমাজকে এগিয়ে নেবার দায়িত্ব আমাদের সবার ।পৃথিবী আরো শান্তির স্থান হয়ে ওঠুক ,মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ,সহানুভূতিসহ সব মানবীয় গুণাবলী বাড়তে থাকুক ।নিত্য নতুন আবিষ্কারের নেশায় মেতে ওঠুক প্রজন্ম ।আর এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে 'থিংক ডিফারেন্ট ' ম্যাগাজিনের পথচলা ।

বৈজ্ঞানিক ভাবে দেখা যাক, অভ্যাস কীভাবে আমাদের বেধে রেখেছে?

1 comment :

  Bob proctor,

……………….

খুব পুরনো আর বিখ্যাত কিছু গল্পের মধ্যে আলাদিনের আশ্চার্য প্রদিপের গল্পটা খুবই জনপ্রিয়  আলাদিন তার প্রদিপে ঘষা দিলেই দৈত্যের আগমন ঘটত আলাদিন যা আদেশ করত দৈত্য তখনই তা পালন করত আলাদিনের আশ্চার্য প্রদিপের থেকেও আমাদের জীবনটা আরও বেশি আশ্চার্যময় আমরা যেভাবে জীবনটাকে চাই ঠিক সেভাবেই গঠন করতে পারি


Dr. jon,

……………………

কোন ব্যাপার না এখন আমরা কোন অবস্থায় আছি জীবনটাকে সুন্দর করতে হলে আমাদের সুন্দর কিছু অভ্যাস তৈরি করতে হবে আপনার জীবনের আজকের এই অবস্থা আপনার সবগুলো অভ্যাসের যোগফল


কিছু সুন্দর অভ্যাস জীবনকে উন্নতির পথে নেয় আর খারাপ অভ্যাস জন্ম নিলেই আপনাকে খারাপ দিতে নিয়ে যাবে প্রতিদিনের খাবার যদি আমরা সঠিক সময়ে খেয়ে নিই তবে স্বাস্থগত দিক হতে ভাল থাকবনিয়মিত ব্যায়াম শরীর সুস্থ রাখে ঠিক একই ভাবে পড়াশোনা এবং সর্ব বিষয়ে সর্বৎকৃষ্ট অভ্যাস গড়ে তোলা গেলে সেটা আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করে তুলবে

এক ব্যাক্তি প্রচুর সিগরেট খেত এটার জন্য তাকে প্রচুর সমস্যায় ও পড়তে হয় সে কিছুতেই এই বদ অভ্যাস ছাড়তে পারছিল নাএক দিন সে মনে মনে প্রতিঙ্গা করল , এই বদ অভ্যাস সে ছেড়ে দেবেই একটানা তিনদিন না খেয়ে থাকল পরদিন তার এক বন্ধুর সাথে দেখা হল , যে প্রচুর সিগরেট খেত বন্ধুকে দেখেই তার আবার সিগরেট খাবার কথা মনে পড়ে গেল নিজেকে এবার আর সামলাতে পারল না তার সব প্রতিঙ্গা বিনষ্ট হল, বন্ধুকে দেখার পরঠিক একই  রকম ভাবে, আড্ডা দেবার ক্ষেত্রে বন্ধুদের দেখলেই বই পড়া বাদ দিয়ে আড্ডায় জমে যেতে মন চায় একজন গাজাখোর আরেকজন গাজাখোরকে দেখলেই মাথায় নেশা চেপে বসে আবার যার বই পড়তে ভাল লাগে ‘বিভিন্ন বই’ হতে পারে , সে যদি নতুন আর প্রিয় কোন বই পায় , তবে সে অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে ওটাই পড়া শুরু করে দেয়যারা খুব ফেসবুক চালায় , তাদের রাতে ঘুমতে যাবার আগে মনে হয় যেন নোটিফিকেশন গুল একটু দেখে নিই ফেসবুকে কে কী কমেন্ট করল? কে কী মেসেজ দিল? এগুল দেখার প্রবল আকর্ষন তৈরি হয় মস্তিষ্কে


বৈজ্ঞানিক ভাবে দেখা যাক, অভ্যাস কীভাবে আমাদের বেধে রেখেছে? অভ্যাসের তিনটে পার্ট আছে , ……..

১।রিওয়ার্ড

২।ট্রিগার

৩।রুটিন


                                                   রিওয়ার্ড

                                            ……………………

                                            

মানুষ এবং বানর প্রজাতির ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্কে এক বিশেষ ধরনের ঘটনা ঘটে । বিশেষ কোন  মুহুর্ত যেমন: হতে পারে প্রিয় মানুষটার সাথে হাতে হাতে রেখে পাশাপাশি প্রথম দিনের হেটে বেড়ানোর মুহুর্ত , মামুর দোকানের দুধ, চিনি দিয়ে গরম এক কাপ চা খাওয়ার মুহুর্ত, বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা মারার মুহুর্ত যারা নেশা করে হতে পারে মদ, গাজা, হেরইন, কোকেন ইত্যাদি খাবার সময় এর মুহুর্ত এরকম আরও প্রিয় মুহুর্ত গুলোর টাইমে আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক এক বিশেষ কেমিকাল নিঃসরন হয় যার ফলে আমরা মজার একটা অনুভুতি পাই এই অনুভূতি গুলোর স্মৃতি মস্তিষ্কে জমা থাকে আর যখনই আমাদের ঐ মুহুর্ত গুলোর কথা মনে পড়ে তখনই আমরা বার বার ঠিক আগের মত ঐ একই রকম অনুভুতি বার বার পেতে চাই


                                              ট্রিগার

                                        …………………………

যারা খুব বই পড়তে ভালবাসে, তারা যখনই তাদের সমমনা বই পড়ুয়াদের কাছে পায় তখন, বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে দুইজন আলচনা করতে লেগে যায় বন্ধুদের কাছে পেলে আড্ডা দিতে মন চায়অনেকের ই এরকম ঘটে যে, যখনই টেনশনে পড়ে তখনই সিগরেট খেতে মন চায় একজন সিগরেট খোর বন্ধুকে কাছে পেলে সিগরেট খাবার চিন্তা মাথায় আসেএকটা ছেলে সিগরেট খেত প্রচুর কিন্তু এক সময় সে চাইল সে সিগরেট খাওয়া ছেড়ে দিবে দুই দিন একটানা সিগরেট না খেয়ে কাটাল কিন্তু পরদিন সে একটা বিষয় নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেল তখন ছেলেটা ভাবল সিগরেট খেলে মনে হয় টেনশন কমে যাবে তাই এবার আবার সিগরেট খেয়ে বসল পরদিন সকালে তার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বেরল তার সামনে তার বন্ধুরা যখন সিগরেট খেল, তখন সে আবার বন্ধুদের পালায় পড়ে সিগরেট খেল নিজেকে এবার ও আটকাতে পারল না ঠিক একইভাবে প্রতিটা বদ অভ্যাস আমাদের তাড়া করে নিয়ে বেড়ায়


                  ‘রুটিন’

              ……………………..

  রুটিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলেই আমাদের দাঁত ব্রাশ করার কথা অটোমেটিক মাথায় চলে আসে ঠিক সকাল, দুপু, রাতে খাবার খাওয়ার মত কোন ব্যাক্তি যদি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে চা খাওয়া শুরু করে তবে এটা একদিন তার অভ্যাসে পরিনত হবে



যখনই আমরা কিছু করতে চাই, সেটা হতে পারে অভ্যাসের পরিবর্তন অথবা অন্য যে কোন কিছু সবসময় খেয়াল রাখতে হবে তোমার চিন্তা, কর্ম ও পরিপার্শ যেন তোমার উদ্যেশ্য কে অন্য পথে না নিয়ে যায়তুমি যদি পৃথিবীকে কিছু দিতে চাও তবে আগে তোমাকে গড়ে উঠতে হবে



অভ্যাস পরিবর্তন করতে গেলে আগে জানতে হবে আমাদের অভ্যাস ঠিক কীভাবে গড়ে ওঠে ? আমাদের অনুভূতিতে যে কাজটা করতে গেলে বেশি ভাল লাগে আমরা সেই কাজগুলই বেশি বেশি করতে চাই একটা অভ্যাস গড়ে উঠতে মূলত (২১-৬৬) দিনের মত সময় লাগে কোন অভ্যাসের ‘রিওয়ার্ড’ টা যত বেশি শক্তিশালী হয় অভ্যাস  তত বেশি দৃড় হয়অন্যদিকে অনুভূতি তে ও আমরা পরিবর্তন আনতে পারব না গরম দুধ, চিনি দেওয়া চা দেখলে খেতে ইচ্ছা করবেই আবার যারা গাজা খায় তারা যদি সমানে গাজার কলকি পায় তবে তারাও নিজেকে ধরে রাখতে পারবে না ব্রেন অটোমেটিকলি গাজা খেতে তাড়া করবে ঠিক একই রকম ভাবে প্রতিটা ব্যাপারেই একইরকম ঘটনা ঘটবে এভাবেই অভ্যাস গুলো আমাদের আটকে রেখেছে


তুমি যদি আলাদিনের আশ্চার্য প্রদিপের কথা শুনে থাক তাহল, নিশ্চই জান আলাদিন নিজে জানত সে কী চায়? তারপর সে তার দৈত্য কে সেটা আনতে আদেশ করত আলাদিন আগে নিজে এটা ঠিক করত তার এখন চাওয়া টা কী? অভ্যাস হোক অথবা আর যাই হোক না কেন প্রথমে ক্লিয়ার করতে হবে আমরা কী চাই? তারপর আমাদের কাছে নেমে পড়তে হবে


খারাপ অভ্যাস গুলোর ‘রিওয়ার্ড’ টা আমাদের ব্রেন এ খুব শক্তশালী ভাবে গেথে থাকে তাই এক দিনে এই বদ অভ্যাস গুলো দূর করা মোটেই সম্ভব না আমাদের ব্রেন ঠিক ইলাস্তিকের মত কোন ক্ষত ই স্থায়ী নয় আমরা চাইলে মস্তিষ্ক থেকে সব বাজে অভ্যাস গুলো দূর করতে পারি ব্রেনের রিওয়ার্ড সার্কিট গুলোর কারনে বদ নেশা গুলোর জন্য আমরা কিছুটা ভাল লাগা অনুভব করি আমাদের ঐ ভাল লাগাটা কমিয়ে আনতে হবে ধীরে ধীরেঅতএব, যে প্রতিদিন ২ প্যাকেট সিগরেট খেত এখান, তাকে অন্তত ১০ দিন 1 প্যাকেট করে খেতে হবে তারপর ১০ দিন তাকে অধ প্যাকেট করে খেতে হবে এভাবে অধ প্যাকেট খাওয়া চালিয়ে খেতে হবে তারপর দিন তারও অর্ধেক খেতে হবে এভাবে আস্তে আস্তে পরিমানে কমাতে হবে এখন প্রশ্ন হল যে লোকটা এক প্যাকেট সিগরেট খায় ধরে নি, এক প্যাকেটে ১০ টা সিগরেট  আছে তার দিনে অন্তত (১০-১৫) বার সিগরেট খাবার ইচ্ছা জাগে তাকে যদি ৫ টা খেয়ে কাটাতে হয় তাহলে বাকী সময়ে যখনই তার সিগরেটা খেতে মন চাইবে তখন সে কী করবে?তার বাকী যতবার সিগরেট খেতে মন চাইবে তখনই তার অন্য কোন ভাল লাগার জিনিস খেতে হবে হতে পারে জুস, ফল, মিষ্টি অথবা অন্যকিছু অবশ্যই সেটা তার ভাল লাগার জিনিস হতে হবে এবং সেটা যেন ক্ষতিকর না হয় ।এভাবে প্রতি 10 দিনের মাথায় অথবা ৭ দিনের মাথায় সিগরেট বা অন্য  যে কোন বাজে জিনিস খাবার পরিমান কমিয়ে আনতে হবে এবং ঐ বাকী টাইমে তাকে অন্য কোন ভাল লাগার কাজ করতে হবে অথবা ভাল লাগে এমন কিছু খেতে হবেএভাবে(২১-৬০) দিনের মধ্যে ঐ বদ অভ্যাস কে দূরে পাঠানো যায় একটা অভ্যাস গড়ে তুলতে এর (২১-৬০) মত সময় লাগে যদি কোন অভ্যাস আমাদের মাঝে একটু বেশি গেড়ে বসে তবে তাকে আস্তে আস্তে ছাড়াতে হয় প্রতিটা অভ্যাসের বেলায় আপনি ঐ নিয়ম ব্যাবহার করতে পারবেন প্রথমে যে বদ অভ্যাস আপনার মাঝে বাসা বেধেছে সেটা অল্প অল্প করে নিজের ভেতর থেকে বের করতে থাকতে হবে আর ঐ বাকী যখনই বাজে অভ্যাস গুলো আপনাকে তাড়া করতে চাইবে তখন আপনাকে আপনার ভাল লাগার অন্য কোন কাজে মন দিতে চেষ্টা করতে হবে তবে কখনও  পারফেকশনিস্ট হতে চেষ্টা করবেন নাকিছু কিছু বদ অভ্যাস বাজে আড্ডায় গেলে, খারাপ বন্ধুদের কাছে গেলে মাথার ভেতর অটোমেটিক জেগে ওঠে নিজেকে ভাবতে হবে আমার ভেতরের বদ অভ্যাস গুল কখন জাগে হয়ত সেইসব বন্ধুদের আড্ডা ত্যাগ করাটাই ভাল যাদের কাছে গেলে মাথায় কু চিন্তা গুল জাগেস্টিব জবস “বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি পন্য নির্মাতা” তিনি তার বন্ধু স্টিভ ওজনিয়াকের সাথে মিশতেন স্টিভ ওজনিয়াক,  এপল(১ও২) কম্পিউর এর নির্মাতা স্টিভ জবস তার বন্ধু ওজের থেকে ইলেকট্রনিক্স জগতে আসার প্রেরনা পেয়েছিলেন সেরা বন্ধুর সাথে, ভাল কোন পজেটিভ সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকলে নিজের ভেতরের বদ অভ্যাস তাড়ানোর প্রেরনা খুব সহজেই আমরা পেয়ে থাকি



কোন ব্যাপার না এখন তুমি কতটা খারাপ অভ্যাসের মধ্যে পড়ে আছ সব থেকে বড় বদ অভ্যাস চিরস্থায়ী ভাবে বিদায় জানান সম্ভব


DR. JOE VITALE,

.....................

Your current reality or your current life is a result of the thoughts you have been thinking. All of that will totally change as you begin to change your thoughts and your feelings.



Bob Proctor,

...............

Expectation is a powerful attractive force, because it draws things to you. As Bob Proctor says, "Desire connects you with the thing desired and expectation draws it into your life." Expect the things you want and don't expect the things you don't want. What do you expect now?


Most people look at their current state of affairs and they say, "This is who I am." That's not who you are. That's who you were .



LISA NICHOLS,

……………………..

When you focus on lack and scarcity and what you don't have, you fuss about it with your family, you discuss it with your friends, you tell your children that you don't have enough —"'We don't have enough for that, we can't afford that"—then you'll never be able to afford it, because you begin to attract more of what you don't have. If you want abundance, if you want prosperity, then focus on abundance. Focus on prosperity.



লেখাটা পড়ে যদি ভাল লাগে তবে কমেন্ট করতে অনুরোধ করছি তাহলে আর একটা লেখাও লিখব কীভাবে একটা সৃষ্টিশীল একটা অভ্যাস গড়ে তোলা যায়?



                                                                            এই লেখাটা লিখতে যে বই গুলর থেকে বিভিন্ন ভাবে হেল্প নিয়েছি (THE POWER OF HABIT by CHARLES DUHIGG,  THE SEVEN HABITS OF HIGHLY EFFECTIVE PEOPLE Stephen R. Covey )


 

writer : prosenjit biswas


জনপ্রিয় পোষ্ট