থিংক  ডিফারেন্ট

সমাজকে এগিয়ে নেবার দায়িত্ব আমাদের সবার ।পৃথিবী আরো শান্তির স্থান হয়ে ওঠুক ,মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ,সহানুভূতিসহ সব মানবীয় গুণাবলী বাড়তে থাকুক ।নিত্য নতুন আবিষ্কারের নেশায় মেতে ওঠুক প্রজন্ম ।আর এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে 'থিংক ডিফারেন্ট ' ম্যাগাজিনের পথচলা ।

সাইকো

No comments :

সাইকো

অপরেশ পাল (অনুবাদ)
paart - 3


রুমে তিনটি জীবিত প্রানীর শ্বাসপ্রশ্বাস শোনা যাচ্ছে। একজন চেয়ারে বাঁধা। আরেকজন বাঁধা অবস্থায় ফ্লোরে পরে রয়েছে। চেয়ারে বাধা মেয়েটির নাম নাদিয়া। বয়সটা কমই বলা যায়, মাত্র চব্বিশ। অল্প কিছুদিন হয়েছে সে মিডিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে। ফ্লোরে পরে থাকা মেয়েটির বয়স চার। নাদিয়ার মেয়ে। মেয়েটি না বলেই বাচ্চা বলাটাই মানানসই। কিউট দুধের মত ফর্সা একটা বাচ্চা। ফ্লোরে পরে থাকার কারনে বাচ্চার গাল লাল হয়ে গিয়েছে। রুমের তৃতীয় লোকটি তার হাতের কুড়াল নিয়ে নাদিয়ার সামনে চলে আসলো। ফ্লোরে পরে থাকা বাচ্চার মত সে চেতনাহীন অবস্থায় রয়েছে। চেয়ারের সামনে রাখা এক বালতি পানি নাদিয়ার দিকে ছুড়ে মারলো লোকটি। দ্রুত উঠে বসার চেষ্টা করলো নাদিয়া। কিন্তু বাঁধা থাকার কারনে সেটা সম্ভব হয়ে উঠলো না। চিৎকার দিতে গিয়ে নাদিয়া বুঝতে পারলো তার মুখের ভিতরে কিছু একটি গুঁজে দেওয়া হয়েছে। যার কারনে কোন শব্দ বের করতে পারলো না সে। শুধু কয়েকবার গো গো আওয়াজ বের হলো । নাদিয়া সামান্য সামনে তার মেয়েকে পরে থাকতে দেখলো। কি হচ্ছে এখানে দ্রুত ভেবে যাচ্ছে সে । কুড়াল হাতে লোকটি তার বাচ্চার পাশে এসে দাড়ালো। বাচ্চাটাকে তুলে আনার কোন ইচ্ছে তার ছিলো না। কিন্তু নাদিয়া কে যখন পিছনে থেকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলতে যাবে এমন সময় পিচ্চিটা কোথায় থেকে চলে আসে। হয়তো বাবার কাছে থেকে মায়ের কাছে এসেছিলো। নাদিয়ার স্বামী তখন দোকানে কি যেন কিনছিলো। বাচ্চা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করেনি সে। একেও ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলে নেয়। তারপর এখানে নিয়ে এসেছে। বাচ্চাকে এভভাবে তুলে নিয়ে আসার কোন প্লান তার ছিলো না। কিন্তু বাচ্চা তার চেহারা দেখেছে। রিস্ক নেওয়া যায় না, যতই ছোট হোক না কেন। তবে সেটা নিয়ে এখন লোকটির কোন আপত্তি নেই। এ মূহুর্তে তার মাথায় সুন্দর একটা প্লান এসেছে । বাচ্চার পেট বরাবর লোকটি তার বুট পরা পা দিয়ে গায়ের জোরে লাথি মারলো। বাচ্চা মেয়েটি জ্ঞান কিছুক্ষণ আগে ফিরে এসেছিলো । লাথির প্রচন্ড আঘাতে চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু তার টেপ প্যাঁচানো মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হলো না। পা দিয়েই চার বছরের বাচ্চা মেয়েটির সোজা করলো লোকটি। হাতের কুড়াল টা ষাট ওয়াটের বাল্বের আলোতে চকচক করছে। কপালের একটু উপরে সেটা সে মাপমতো ধরলো। তারপর ধীরেসুস্থে ভারসাম্য রেখে লোকটি নিজের পিছনে কুড়ালটি নিয়ে আসলো। তার দিকে দুই জোড়া চোখ তাকিয়ে রয়েছে। নাদিয়া ও তার চার বছরের বাচ্চা মেয়েটি। নাদিয়া বিশ্বাস করতে পারছে না এটা সত্যিই হতে যাচ্ছে। সত্যিই সামনে দাঁড়ানো অপরিচিত লোকটি তার আদরের বাচ্চাটার মাথা বরাবর কোপ দিতে যাচ্ছে। খট করে শব্দ হলো। কুড়ালটি নামিয়ে এনেছে লোকটি। বাচ্চা মেয়েটির করোটি কেটে ফ্লোরে বাড়ি খেয়েছে কুড়ালটি। নাদিয়া চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। যদিও হালকাভাবে গোঙানি ছাড়া অন্য কোন শব্দ শোনা গেল না। লোকটি সেদিকে কোন ভূরুক্ষেপ করলো না। কুড়াল আবার পিছনে নিয়ে আসলো। আগের বারেব মত গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে বাচ্চার কন্ঠ বরাবর কোপ দিলো। কোপ দেওয়ার সাথে সাথে মাথাটা ছিটকে দূরে চলে গেল। লোকটি হাতের কুড়াল ফ্লোরে রেখে দিলো একপাশে রাখা একটা মাঝারি আকারের স্টিলের চেয়ার টেনে নাদিয়ার সামনে নিয়ে আসলো। টেবিলের উপর কয়েক ধরনের ছুরি, চাপাতি, কাচি, বড়সর কিছু লোহার পেরেক আর হাতুড়ি গুছিয়ে রাখলো। এরমধ্যে নাদিয়ার জ্ঞান ফিরে এসেছে। সে তাকিয়ে তার মাথাহীন বাচ্চার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পরেছে। নাদিয়ায় জ্ঞান ফিরে আসায় সবথেকে বেশি খুশি হয়েছে লোকটি। রুমের এক কোনায় পরে থাকা নাদিয়ার বাচ্চার মাথা সে তুলে নিলো। আর সেটা তুলে নিয়ে ঠিক নাদিয়ার সামনে রাখা স্টিলের টেবিলের উপর রাখলো। নিঃশব্দ অট্টহাসি হাসছে লোকটি। পরিস্থিতি খুব মজার লাগছে কিনা তার কাছে। বাচ্চার মুখটা ঘুরিয়ে নাদিয়ার দিকে ফিরিয়ে দিলো সে। মাথার করোটি কাটার কারনে মস্তিষ্ক বের হয়ে আছে। অবশ্য ফ্লোরে ছিটকে পরার কারনে কিছু অংশ নষ্ট হয়ে মস্তিষ্কের আসল আকার হারিয়ে ফেলছে। বাচ্চা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে রয়েছে। মুখে টেপ পেচানোর কারনে নিচের অংশের কোন পরিবর্তন নেই। শুধু রক্তাক্ত কন্ঠনালী বাদে। - বাবু স্মাইল দেও তোমার আম্মুকে। ওহো তোমার মুখ তো বাধা। সরি ভুল হইছে আমার। কথা বলে এই প্রথম জোরেশোরে হাসতে শুরু করলো লোকটি। ভয়ানক এক হাসি। মাথাটা ঘুরিয়ে নিজের দিকে তাক করলো লোকটি। বাচ্চার মাথা নিয়ে তার প্লানটা বাস্তবায়ন করতে হবে। হাতে একটা স্ক্রু ড্রাইভার তুলে নিলো সে। খচ করে বাচ্চার ডান চোখে সেটা গেথে দিলো। হালকা মোচড় দিতেই চোখের অক্ষিগোলক সহ স্ক্র ড্রাইভার চলে আসলো। নাদিয়ার কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না । তার কান্নাও বহু আগে থেমে গিয়েছে। সে শুধু তাকিয়ে দেখছে। কারন এছাড়া তার করার কিছু নেই। এই অল্প সময়ের মধ্যে সে এই নির্মম সত্য বুঝতে পেরেছে। স্ক্রু ড্রাইভারের মাথা দিয়ে চোখটা হাতে নিলো লোকটি। একবার নাদিয়ার দিকে তাকালো তারপর হাতের চোখের দিকে। গপ করে মুখে সেটা পুরে দিলো সে । কোন কথা না বলে পাঁচ মিনিট চাবিয়ে সেটা গিলে ফেললো চোখটি । আবার কথা বললো লোকটি, বাচ্চাটা দেখতে কত সুইট কিন্তু ওর চোখ এত বাজে স্বাদের কেন ? কথাটা নাদিয়ার উদ্যেশ্যে বলছিলো যদিও লোকটি। তবে কোন উত্তর আশা করেনি। কয়েকবার ভাবার পর সে সিদ্ধান্ত নিলো না অপর চোখ খাবে না। তবে হাতে সে একটা চামচ তুলে নিয়েছে এবার। মিডিয়াম সাইজের চা চামচ। চামচ টা বাচ্চা মস্তিষ্কের মধ্যে ডুবিয়ে দিলো সে। চামচটা যখন তুললো তখন সেখানে মস্তিষ্ক উঠি এসেছিলো। কয়েক চামচ খাওয়া পর লোকটি বুঝতে পারলো এটাও মজার না। একটা পলিথিন আর মোটা কাগজের বক্স সে নিয়ে আসলো। টেবিলে রাখলো না সেগুলো। একটু দূরে ফ্লোরে রাখলো। কারন সে কোনভাবেই চায় না রক্ত প্যাকেটে লেগে থাকুক। হাতে ছুরি নিয়ে বাচ্চা বাম গালে কাটাকাটি শুরু করলো সে। গভীর করে কাঁটতে শুরু করলো সে। হাতে দুইটা ছোট সাইজের মোটামুটি চিকন স্টিলের রড বাচ্চার ডান চোখের গর্তের মধ্যে গেথে দিলো। - পারফেক্ট। উচ্ছ্বাস ঝরে পরলো লোকটির কন্ঠ থেকে। কিছুক্ষণের জন্য অন্যরুমে গিয়ে ক্যানভাস, কালার আর ছবি আঁকার অন্য সরঞ্জাম নিয়ে আসলো সে। প্রথমে ফ্লোরে একটা পেন্টাগ্রাম আঁকলো। তিনটা কালো রংয়ের মোম সেট করলো সেখানে। প্রতিটি মোম অন্যটা থেকে সমান দূরে অবস্থিত। পেন্টাগ্রামের ঠিক মাঝে নাদিয়ার বাচ্চার মাথাটা সে রাখলো। লোকটি ব্লাক মাজিকে বিশ্বাস করে না। তবে এমন একটা মডেল সবসময়ই তৈরি করা যায় না। তাছাড়া তার ছবি আঁকার অভ্যাস আছে। তো সে কিভাবে এরকম দূর্লভ মডেলের ছবি না আর্ট করে পারে ?







No comments :

Post a Comment

Thank you

জনপ্রিয় পোষ্ট