আবেগের সীমাবদ্ধতা
আবেগের সীমাবদ্ধতা.................
প্রতিদিন সমাজের
একটু একটু করে পরিবর্তন হয়ে চলেছে। প্রতিদিনের এই ছোট ছোট পরিবর্তন আমাদের চোখে
হয়ত ধরা পড়ে না । একবারে
যদি খুব ছোট্ট পরিবর্তন এর দিকে খেয়াল করি তবে পরিবর্তন টা বুঝতে একটু কষ্ট হবে । কিন্তু একবারে যদি একটু বড় পরিবর্তন এর দিকে
খেয়াল করি তবে সব কিছু স্পষ্ঠ হবে । যেমনঃ গত ১ দিন বা ১ মাসে কতটা পরিবর্তন হয়েছে সেটা না
ভেবে যদি ভাবি গত ১০ বছরে কতটা পরিবর্তন হয়েছে বা গত ১০০ বছরে কতটা পরিবর্তন হয়েছে ।
প্রতিদিনের ছোট ছোট
পরিবর্তন গুল আমরা ধরতে পারি না । কিন্তু প্রতিনিয়তই ছোট ছোট পরিবর্তন ঘটছে । হঠাৎ
কিছু বছর পর আমরা একটা বড় পরিবর্তন দেখতে পাই । তখনই মনে হয় অনেক কিছু বদলে গেছে ।
কিছু বছর পর আমরা একটা বড় পরিবর্তন দেখতে পাই । তখনই মনে হয় অনেক কিছু বদলে গেছে ।
আজকের সমাজ
ব্যাবস্থা কীভাবে মোড় নিবে আগামী দিনগুলতে ।
আজ থেকে ১০০ বছর বা ১০০০ বছর পর কেমন হবে মানুষের চিন্তা ভাবনা ? কিছু বছর
আগে আমরা যে ধরনের গান শুনতাম বা সিনেমা দেখতাম এখন সেগুল আর বেশি ভাল লাগে না।
আমাদের আগের প্রজন্ম যেভাবে তাদের অবসর সময় কাটাত আমরা সেভাবে কাটাই না ।পাল্টে
যাচ্ছে আমাদের গান বা সিনেমা দেখার ধরন । আমরা এখন অনেকটা যন্ত্রের দিকে ঝুকে
পড়েছি ।স্পষ্টত একটা পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুতেই । পারসনাল কম্পিউটর এর ছড়াছড়ি
খুব বেশি দিনের নয় । কিছু বছর আগেও পারসনাল কম্পিউটর খুব কম লোকের কাছে ছিল । আজ
স্মার্ট ফোন সবার হাতে হাতে । একবারও কি ভেবেছি আজ থেকে আরও ১০০ বছর পর কেমন হবে
আমাদের আবাসভূমি ? পরিবর্তনটা কেমন হবে ? কতটা পরিবর্তন হতে পারে ?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে
পরিবর্তনটা কেন হচ্ছে? এখন কিছু উদাহরন দেখা যাক, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুল তাদের
পন্য পরিবর্তন করে উন্নত করছে কারন তাদের বাজারে টিকে থাকতে হবে । আমরা কম্পিউটর
ব্যাবহার করছি কারন শিক্ষা গ্রহন প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে চাই । উন্নত পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য । অর্থাত, সময়ের স্রতের
সাথে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে । টিকে থাকার জন্য প্রানিকূল নিজেকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তন
করছে । গাছপালার ক্ষেত্রে অভিযোযন সংঘটিত হচ্ছে ।এসবের একটাই কারন শুধু পৃথিবীর
বুকে টিকে থাকতে চাই ।
“Survival
of the fittest” এই তত্ত্ব টা ডারউইনের “evolutionary theory” থেকে উদ্ভুত ।ডিকশনারিতে কথাটার বাংলা অর্থ
“যোগ্যতমের বেচে থাকা” এরকম দেওয়া আছে । কিন্তু এটাকে আমরা আরও সুন্দর করে এভাবে
“পৃথিবীতে একমাত্র যোগ্যরাই টিকে থাকবে” বলতে পারি ।
এখন একটা খুবই আশ্চার্যপূর্ন উদাহরন দিব ।
খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর আগে প্রাচীন মিশরের “ফারাওরা” (ফারাওরা তখন মিশর শাসন করত )
গিজায় পিরামিড নির্মান করেছিল ।এবং এই পিরামিড এখনও সপ্তম আশ্চার্যের একটি । তখনকার দিনের মিশরের প্রকৌশলীদের বুদ্ধিমত্তা
তখনকার সময়কে ছাড়িয়ে গেছিল। এবং তার
প্রমান আজও পৃথিবীতে রয়ে গেছে ।আর এই কারনে আজকের দিনের সেরা বুদ্ধিমানরা তাদের নির্মিত
স্থাপত্যকে সপ্তম আশ্চার্যের তালিকায়
স্থান দিয়েছে ।ঠিক একই রকম ভাবে আরও এরকম নিদর্শন পাওয়া যাবে যা
আজকের দিনেও আমাদের ভাবিয়ে তোলে । এখান থেকে খুব সহজে বলতে পারি সর্বপেক্ষা যোগ্যই
একমাত্র টিকে থাকবে । সমাজে সর্বপেক্ষা বুদ্ধিমানদের যুক্তিই একমাত্র টিকে থাকবে
।টিকে থাকার যুদ্ধে যে যত বেশি যোগ্য হবে সেই তত বেশি দিন টিকে থাকবে । আবেগ দিয়ে কখনও টিকে থাকার যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায়
না । এখানে আবেগের ভূমিকা শূন্য ।
অপরাধী কে ?
অপরাধী কে ?
"কাল আমার সাজার চার বছর হল। এখনো ছ'বছর বাকি । খুনের আসামি আমি । এই চার বছরে জেলের
লোকজনের সাথে না হলেও সেলের ছারপোকা,বেডের
উইপোকা আর আরশোলা গুলো বেশ বন্ধু হয়ে গেছে রে ।" বলে একটু কেশে নেয় নির্মল ।
জেলে এসে বিড়ি খাবার অভ্যেসটা ধরেছে সে । "তারপর?" জিজ্ঞেস করে সামনে বসে থাকা ইমন । একমাস হলো সে
জেলে এসেছে । "তার আর পর নেই রে । আগে তোর কথা বল দেখি । দেখে
তো ভদ্র মনে হচ্ছে , তা এখানে কি মনে করে এলে ? " বলে একটা আলতো চাপড় মারে ইমনের পিঠে । "দাঁড়াও দাঁড়াও বলছি । আগে চা নিয়ে আসি ।" চা আনতে যায় ইমন । নির্মল বিড়ি ধরায় আর খাতে বসে
পা নাচাতে থাকে । একটু পরে ছুটতে ছুটতে ইমন এসে দম নিয়ে বলে " এই নাও চা ।
উফঃ ওই চায়ের ওখানে আবার ঝামেলা লাগিয়েছে কার্তিক আর কেষ্ট । আমি ফাঁক দিয়ে নিয়ে
দৌড়ে এলাম । নাও নাও চা ধরো ।" "হম দে । " বিড়ি
টানতে টানতে চা নেয় নির্মল । "আচ্ছা তোমাকে দেখে
অন্যদের মতো লাগে না । বেশ শিক্ষিত দেখতে লাগে । এখানে কিভাবে ? " চা খেতে খেতে প্রশ্ন করে ইমন । নির্মল চায়ে চুমুক দিতে গিয়েও না দিয়ে তাচ্ছিল্যের
সঙ্গে খিচিয়ে ওঠে " হ্যাঁ শালা শিক্ষিত । ওই আদর্শ নিয়ে বাঁচতাম বলেই তো
নিজের লোককেই..." বলে থেমে যায় নির্মল । "নিজের
লোককে কি ?" বল নির্মল দা । একটু ইতস্তত হয়ে পড়ে নির্মল । " তোর এত জেনে
কাজ নেই । তুই বহুত ঝানু মাল । নেতা ফেতা ছিলি নাকি রে ? এত ভালো কথা ঘোরাতে পারিস ।" বলে বেশ
খানিকটা স্বাভাবিক বোধ করে নির্মল । এবারে
ইমন বেশ একটু রেগে গিয়েই বলে" নেতাদের কথা একদম তুলবে না । ওর জন্যই তো আজ
এখানে " । "মানে টা কি ? পার্টির
গুন্ডা ছিলি নাকি ?হাওয়া পাল্টাতে এখানে পাঠিয়েছে ? " খ্যাক খ্যাক করে হেসে ওঠে নির্মল , যেটা ইমনের উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দেয় । " পার্টির গুন্ডা হলে তো হিল্লে হয়ে যেত । আজকের
দিনে বেকারদের কাছে ওটাই সহজলভ্য বুঝলে । জানো চার বছর ধরে গ্রূপ ডি র জন্য
পরীক্ষা দিয়েও একটা চাকরি জোটাতে পারলাম না ।" বলে চেয়ারের হাতলে ঘুষি মারে
ইমন । "আর একদিন সন্ধেয় দেখি এক নেতা মিটিংয়ে বলছে রাজ্যে নাকি চাকরি অনেক , বেকারত্ব সমস্যা অনেকটা কমে গেছে ।
রিক্রুটমেন্ট-এ কোনো দুনম্বরী নেই । মাথায় গেল রাগ চড়ে , জুতো খুলে মারলাম তার মুখে । "বলতে বলতেই
চায়ের ভাড়টায় শেষ চুমুক দিয়ে মেঝেতে আছাড় মারে । একটু দম নেয় ইমন, জল খেতে
খেতে বলে "ব্যস আর যায় কোথায়, পুলিশ
সাথে সাথে ধরলো আর তিন মাসের জেল " । এতক্ষন হা হয়ে শুনছিল নির্মল । চায়ে শেষ চুমুক
দিয়ে আরেকটা বিড়ি ধরাতে ধরাতে বললো " হম বুঝলাম । তা এখন থেকে বেরিয়ে কি করবি
? বাড়িতে লোকজন তো আছে নাকি ? খাওয়াতে হবে তো তা... " একরকম অবজ্ঞার সুরে ইমন বলে ওঠে "হু । বাড়ির
লোক । তিনকুলে আর কেউ নেই । " "মানে"
? বিস্ময়ের সাথে বলে সে । "আফস্পা আইনের নাম শুনেছ ? " ইমন নিচু স্বরে বলে । "আফস্পা ! " আৎকে ওঠে নির্মল । এবার নির্মল উদাসীন ভাবে বলে চলে " আমার
বাড়ি মনিপুরে , মেঘলাপুরায়। মা,আমি আর
বাবা ওখানেই থাকতাম । পাঁচ বছর আগে আমি
কাজের জন্য কলকাতায় এসেছি। একটা মেসে ছয় জন থাকতাম । টিউশনি পরিয়ে কোনোরকমে চলছিল
।" নির্মলের উসখুশনি বাড়তে লাগলো । হটাৎ একটু যেন সজাগ হয়ে উঠে ইমন বলতে থাকে
"একবছরের মাথায় খবর পেলাম গ্রামে মাওবাদী সন্দেহে জওয়ানরা হামলা চালিয়েছে ।
জানো আমাদের গ্রাম শ্মশান হয়ে গেছিলো । কাউকে মারতে ছাড়েনি ওই শুয়োরের বাচ্চাগুলো
। তখনই ঠিক করেছিলাম ফোর্সের হেড কে পেলে মেরে ফেলে দেব " । চিৎকার করে বলে
ওঠে ইমন । তারপর নিস্তব্ধতা । নিস্তব্ধতা ভেদ করে একটা কুটিল হাসি হেসে ইমন বলে
"তার এক মাস পর খবর পেয়েছিলাম সেই হেড মারা গেছে "বলে আবার হাসলো ।
" কি জানি নাম, দি-দিগন-..." " দিগন্ত
চাকলাদার " । শান্ত অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বলে নির্মল । "হ্যাঁ তাই তো । সেদিন যে কি আনন্দ পেয়েছিলাম না ।
যে মেরেছিল তার জন্য গর্ব হচ্ছিল । কিন্তু তুমি ওর নাম জানলে কি করে ?" প্রশ্ন করে ইমন । " আমার
পুরো নাম নির্মল চাকলাদার । দিগন্ত চাকলাদার আমার বাবা । " সিলিং এর দিকে
তাকিয়ে বলে নির্মল । ইমন উঠে দাঁড়িয়ে
কিছু একটা বলতে গিয়েও ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ে । নির্মল বিড়ি ধরিয়ে বলতে শুরু করে " যখন ওই
ঘটনাটা ঘটে তখন আমি মেঘলাপুরাতেই এক আত্মীয়র বাড়িতে রয়েছি । সেদিন সকাল থেকে খুব
চেঁচামেচি চলছিল । বাড়িতে আমি আর আমার কাকা । বাবা হটাৎ ঘরে ঢুকে বলে কাউকে না
বেরোতে । বলেই ঝড়ের বেগে বেরিয়ে যায় । বাবা বেরিয়ে যেতেই কাকা আর্তনাদ করে ওঠে
" আফস্পা" । সেদিনই প্রথম কথাটা শুনেছিলাম । তার মানে জানতে চাইলেও কাকা
বলেনি । কাকা দোতলায় চলে গেল । আমি একা নিচে বসে রইলাম । " এই বলে ইমনের থেকে
বোতল নিয়ে জল খেল সে ।
" তারপর হটাৎ শুনতে
পেলাম গুলির শব্দ । দৌড়ে গেলাম জানলার কাছে । বাইরে তাকিয়ে যা দেখলাম তা দেখে আমি
স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম । বাইরে একটা ধোঁয়াটে পরিবেশ হয়েছে । তার মধ্যে দিয়ে দেখলাম কয়েকজন
জওয়ান কয়েকজন মেয়ের চুলের মুটি ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে । কয়েকজন বেনয়েট দিয়ে
খোঁচাচ্ছে মাঝবয়েসী কয়েকজন কে । মাটি রক্তে ভাসছে । বাচ্চাদের পর্যন্ত লাঠি দিয়ে
মারছে । সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য । বুঝতে
পারছিলাম একেই বলে আফস্পা । অন্যদিকে কয়েকজন পালাচ্ছিল,আমি মনে প্রাণে চাইছিলাম তারা পালাক কিন্তু হটাৎ
ধোঁয়াশা মধ্যে এক লোকের এক হাতে বেয়নেট , সে এক
বৃদ্ধর পেটে বেয়নেট ঢুকিয়ে হেসে উঠলো, সে কি
পৈশাচিক হাসি । ইচ্ছে করছিল গিয়ে মেরে ফেলি । বেশ চেনা লাগছিল তাকে । সে আদেশ করে বাকিদের বললো "ধর ধর । পালাচ্ছে । একটাকেও ছাড়বি না । সবকটাকে
শেষ করে ফেল । জঙ্গি কোথাকারে । উদ্বাস্তু সব । মেরে ফেল সবকটাকে ।
আর শোন দু তিনটে ফ্রেশ মেয়ে আমার জন্য রেখে দিবি । নাহলে সবকটার চাকরি খেয়ে নেব ।
আমি একটু আসছি । " লোকটা
পেছনে ঘুরে আমাদের বাড়ির দিকেই আসছিলো , দেখি
সেটা আমার বাবা । নিজের চোখে বিশ্বাস হচ্ছিল না , এই কি
সেই আমার বাবা যে আমাকে আদর্শ শিখিয়েছিল, এ তার
কি হিংস্র, বর্বর রূপ , বাড়ির
দিকেই এগিয়ে আসছে বাবারূপী জন্তুটা । হটাৎ গুলির শব্দ । যারা পালাচ্ছিল তাদের গুল
গুলি করা হয়েছে , আর পালাতে পারলো না তারা । " বলতে বলতে গলা
শুকিয়ে এল তার । আবার একটু জল খেয়ে নিয়ে আবার শুরু করলো । " বাড়ির বেল বাজলো । আমি গিয়ে দরজা খুলতেই বাবা ঘরে
এসে সোফাতে আরাম করে বসে আমাকে জল আনতে বললো । আমি জল এনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম ।
বাবা আমাকে দেখতে পায়নি । আমি
স্পষ্ট শুনলাম বাবা বিড়বিড় করছে , " আজ বেশ
শান্তি লাগছে । আহঃ ! ওই চিৎকার । কি আরাম । " আমি শুনে হতবাক । এ কি ! এত স্পষ্ট জানোয়ার । চেঁচিয়ে উঠলাম "একি বলছো বাবা । এসব কি
চিন্তাভাবনা তোমার ?"
বাবা আমার দিকে ক্লান্তিভরে তাকিয়ে
বললো" ও তুই । আর শোন ওসব ডেইলি ব্যাপার । দে জলটা দে । " " কে তোমায় অধিকার দিয়েছে এই নিরপরাধ মানুষগুলোকে
মারার ? " আমার মাথা তখন বো বো করে ঘুরছে । "যাদের নিরপরাধ বলছিস ওরা সব জঙ্গি, দেশের আগাছা । ওদের মারার পুরো অধিকার রয়েছে আমার
। একে বলে আফস্পা আইন প্রয়োগ । এসব বুঝবি না ।" তাচ্ছিল্যের সাথে বলে বাবা । আমার মাথা দপ করে জ্বলে ওঠে"কে জঙ্গি ? ওই বাচ্চা ছেলেটাও জঙ্গি, ওই যুবতী মেয়েরাও জঙ্গি, বৃদ্ধরাও জঙ্গি ? তবে
তুমি কি ? আর মেয়েদের তোমরা এইভাবে ধর্ষণ করো । " বলতে
বলতে সেই টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলো চোখে ভাসছিল," তুমি তো সরকারি জঙ্গি । আর ওরাও তো মানুষ । তুমিই
তো আমায় শিখিয়েছিলে আদর্শের কথা । আর সেই তুমিই আজ..." " থাম তো, পরের
ছেলে পরমানন্দ , যত গোল্লায় যায় ততই আনন্দ । ওদের নিয়ে আমার কোনো
মাথাব্যথা নেই । বাজে না বকে জলটা দিয়ে দূর হ তো । " বাবা বিরক্ত হয়ে বলে । আমি চেঁচিয়ে উঠলাম "ও তার মানে তোমার কোনো
অনুশোচনা নেই ? একটুও লজ্জা হচ্ছে না এই কাজের জন্য ? ওই নিরপরাধ মানুষকে মেরে কিসের জওয়ান ? ধিক্কার তোমাদের , তোমাদের
রাষ্ট্র যন্ত্রের মুখে । " বাবা
তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বেশ জোর দিয়ে বললো" না নেই । কোনো অনুশোচনা নেই । এই কাজ
আমি আগেও করেছি , আবারও করবো । " বলে একটা দানবিক হাসলো । আমি প্রমাদ গুনলাম । মাথায় একটা চিন্তাই ঘুরছিল
এই লোকটা আমার বাবা ছিল কিন্তু তার পাশে এ এক রক্তপিপাসু দানব । বেঁচে থাকলে আরো
অনেক গ্রাম উজাড় করবে ,
" কিরে জলটা দে । আবার
বাইরে যেতে হবে ।"এবার আমরা ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল , হিহাতীত জ্ঞানশুন্য হয়ে জোরে চিৎকার করে হাতের
গ্লাসটা ছুড়ে মারলাম বাবার দিকে । সেটা গিয়ে লাগলো বাবার কপালে, বাবা মেঝেতে পড়ে গেল, হাতের কাছেই ছিল ফুলদানিটা ,তুলে নিয়ে মারলাম বাবার মাথায় । দুবার মারলাম
।" আহ্হঃ..." চিৎকার করেই এলিয়ে পড়লো সোফাতে । স্পট ডেড । সোফা থেকে
রক্ত গড়িয়ে ভেসে যাচ্ছে সাদা মেঝেটা । কাকা
নিচে নেমে এল আর আর্তনাদ করে উঠলো " খুননন..." । আমি তৎক্ষণাৎ পালিয়ে
গেছিলাম । কিন্তু কতদূরই বা যেতাম । সেই রাতেই ধরা পড়লাম আর তারপর জেলে ।" এই
বলে থামলো নির্মল । ইমনের মুখে একটাও
কথা বেরোলো না । সে বাকরুদ্ধ । হটাৎ
নির্মল এক অট্টহাসি হেসে বললো"আমি তোর বদলা নিয়েছি রে । আমি তোর বদলা নিয়েছি
এন্ড আই ডোন্ট রিপেন্ট ফর দ্যাট মার্ডার ।" আবার সেই এক অমানুষিক হাসি । নির্মল আসতে আসতে উঠে তার বেডে গিয়ে শুয়ে পড়ে ।
নির্মলও চুপ করে বসে থাকে । পরদিনই
ইমনের সেল আলাদা হয়ে যায় । মাঝে আর দেখা হয়নি দুজনের । ইমনের ছাড়া পাওয়ার দিন দেখা
করেছিল , "ভালো থাকিস আর এমন কাজ করিস যাতে আর এখানে না
আসতে হয়" বলেছিলো নির্মল । তারপর বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিদায় জানিয়ে ইমন বেরিয়ে
গেল । নির্মলের চোখটা তখনও ঝাপসা হয়ে ছিল ।
লেখক: নিমোর কলম।
স্মৃতিপট ফেইসবুক
"স্মৃতিপট ফেইসবুক" (কাল্পনিক)
সুশান্ত বিস্বাস
আজ ১৭ই মে ২০৭১ সাল। আমার ৭২ তম জন্মদিন! বসে আছি
চেনা শহরের উঁচু দালানের একটি বেলকোনীতে। বাসার সকলেই ব্যাস্ত। হঠাৎ টেবিলের উপর
নাতির ল্যাপটপটাতে চোখ গেল। কাজ করতে করতে উঠে হয়তো কোথাও গিয়েছে। ফেইসবুকের নীল
দুনিয়াটা চিনতে একটুও ভুল হলো না। ইচ্ছে হলো নিজের আইডিটাতে একটু লগইন করার।
শেষবার লগআউট করেছিলাম ৮/১০ বছর আগে। . ল্যাপটপ টা কাছে টেনেই পাসওয়ার্ড টা মনে করে লগইন
করলাম। চেনা জগতটাতে অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনেক কিছুই নতুন যুক্ত হয়েছে। রিয়েক্ট
বাটনেও নতুন আইকন এসেছে। ১০ বছর পর ফেইসবুকে ঢুকে নিজের হোমপেইজ দেখে চোখের কোণায়
জল জমলো। যেন হাহাকার করছে সবকিছু। অনেক আগে করা কিছু পেইজের পোস্ট ছাড়া আর কিছুই
নেই। . তারপর
গেলাম ফ্রেন্ডলিস্টে। যতদূর মনে পড়ে সংখ্যাটা ছিল ৩৩০ বা তার কিছু বেশি। এখনো ৩০০
জন ফ্রেন্ডলিস্টে আছে! তবে বেশিরভাগ চেনা আইডি পড়ে আছে অযত্নে। কিছু আইডির পাশে 'মেমোরিয়াল' লিখা! আমার লিস্টে সবচেয়ে বেশি ফেইসবুকে এক্টিভ ছিল রিয়াজ। আমার কলেজ
ফ্রেন্ড। ৫ বছর আগে গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছে। তার আইডিতে করা শেষ পোস্টগুলোতে
এখনো মানুষের লাইক পড়ে। ফেরদৌস ছিল শিক্ষক। বেশ জনপ্রিয় ছিল। তার
আইডিতেও মেমোরিয়াল শব্দটি যোগ হয়ে গেছে। শুনেছিলাম বছরখানেক আগে মারা গেছে
ক্যান্সারে। নন্দিনীর আইডিতাটে এখন আর পোস্ট হয় না। ভার্সিটি
লাইফে পোস্ট করা ছবিগুলোতে আমার ছবিগুলোও এখনো পড়ে আছে নীল দুনিয়ায়। স্বামীর সাথে
অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ১০ বছর আগে। এরপর আর কখনো যোগাযোগ হয় নি। আকাশ ছিল খুবই কাছের বন্ধু। ব্যবসায়ে আমাকে বহু সাহায্য করেছিল। তার
আইডিতে শেষ পোস্ট হয়েছিল বহুদিন আগে। রাহুল স্যরের আইডিটা
দেখে মনের মধ্যে কেমন জানি লাগলো। স্যর আমাকে খুব ভালোভাসত। ছেলে মেয়ে বিদেশে।
স্যারের শেষ জীবনটা কেটেছে বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানেই মারা যান তিনি। এরকম আরো অনেকেই। প্রতিটি আইডিতেই জড়িয়ে আছে শুধু কিছু স্মৃতি। আর
কিছুই নেই। . ফ্রেন্ডরিকুয়েস্টের পেইজে এখনো জমা হয়ে আছে ২৩ টি রিকুয়েস্ট। হঠাৎ
দেখলাম ভার্সিটি ফ্রেন্ড শারমিনের আইডিটি। সাথে সাথেই একসেপ্ট করে একটি মেসেজ
দিলাম বড় আগ্রহে। কিন্তু শেষবার সে এক্টিভ ছিল ৬ বছর আগে। বুঝতে পারলাম সেও আর
কখনো আসবে না এই জগতটাতে। আকাশ, মিরাজ, প্রিয়াঙ্কা, মিনহাজ সবার আইডি গুলোতে ঢুকলাম। কারো
কারো আইডিতে চোখে পড়ল নাতি নাতনির ট্যাগ করা সেলফি। তাদের প্রোফাইল পিকচার গুলোর
সাথে তাদের বর্তমান চেহারার অনেক অমিল। . ঢুকলাম কলেজের আর ভার্সিটির গ্রুপগুলোতে।
এডমিন লিস্টে এখনো আমার নামটা আছে। শেষ পোস্টটাও আমারই করা। এখন শুধুই হাহাকার।
চেনা মুখগুলোর হাস্যজ্জ্বল কমেন্ট গুলো পড়ে চোখের জল ধরর রাখতে পারলাম না। একসময়
যে পেইজগুলো থেকে নিয়মিত পোস্ট হত সেগুলো এখন পরে আছে অযত্নে। হয়তো তাদের এডমিনরাও
আটকে পরেছে আমার মত বার্ধক্যের জালে। কেউ আছে কেউ নেই। কেউ বিদেশ, কেউ চলে গেছে না
ফেরার দেশে। একসময় মেসেঞ্জারে ভার্সিটির গ্রুপ গুলোতে মেসেজের খই ফুটতো। শেষবার
সেখানে মেসেজ হয়েছিল ১৩ বছর আগে। শেষ মেসেজগুলো পড়তেই স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে
উঠল। . বন্ধুবান্ধবের
সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো জমে আছে এই ফেইসবুকে। নেই শুধু মানুষগুলো। কেউ জীবিত কেউ
আজ মৃত। সবাইকেই ঘিরে ধরেছে বার্ধক্য। জীবনের বহু হিসেব ধরে রেখেছে এই ফেইসবুক।
প্রতিটি ফ্রেন্ড ফলোয়ারের জন্য জীবনে নষ্ট করেছি কত সময়। অপচয় করেছি কত
টাকা। আজ কিছুই নেই। নিজের করা শেষ পোস্টের
ককেন্টগুলো পড়ে নিজেই কাঁদছি। বার বার চোখে ভেসে উঠছে স্মৃতিগুলো। . অতঃপর চোখ মুছে
শেষবারের মত লগআউট বাটনটাতে ক্লিক করলাম। হয়তো এটাই আমার জীবনের শেষ ফেইসবুকে
ঢুকা। বার্ধক্যের ছোঁয়ায় জীবন আজ শেষের পথে। চার দেওয়ালের মাঝে আবদ্ধ হয়ে পড়েছি।
চোখ জোড়া বন্ধ করতেই যৌবনের বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি, কৌশরের ভার্সিটির বারান্দায় আড্ডা,
শৈশবের
খেলার মাঠ, সবকিছু ভেসে উঠল। সবই আজ স্মৃতি। অনেকেই চলে গেছে এসবের ওপারে। অনেকে
আজো বেঁচে আছে আমার মত নিজের পরিবারটাতে আঁকড়ে ধরে। শেষ সময়টা হয়তো এভাবেই কেটে
যাবে। আর কখনো দেখা হবে না বন্ধুদের সাথে। এখন বন্ধু শুধুই পরিবার। জীবনে কত সময়
দিয়েছি এই ফেইসবুকে। বাস্তবতার হিসাব কষতাম আমি। অথচ বাস্তবতা আজ আমাকে শেখালো আপন
শুধুই পরিবার। বাকী সবাই কোনো না কোনোদিন হারিয়ে যাবে। এটাই জগতের নিয়ম। এভাবেই
হাড়িয়ে যায় জীবন। থেকে যায় শুধু স্মৃতি। হারিয়ে যায় সবকিছু। তবুও জীবনের সাক্ষী
করে কিছু অতীত ধরে রাখে শুধু ফেইসবুক।
হে প্রিয়, হে মোর জন্মভূমি, হে মোর বঙ্গভূমি।
প্রিয়াজগদীশচন্দ্র রায়
Unversity of Calcutta
তুমি কেমন আছো? সুদীর্ঘ ত্রিশ বছর হ’ল তোমাকে ছেড়ে এসেছি। আর এই ত্রিশ বছরে আমি বাধ্য হয়েছি অন্যকে ভাল বাসতে, আপন করে নিতে। এখন, সেই আমার সব কিছু। কিন্তু তবুও আমি কিছুতেই ভুলতে পারিনা তোমাকে। কারণ, আমি অনেক কিছু পেলেও তুমি যা দিয়েছিলে সেটাকে আমৃত্যু মনে রাখতে চাই। মাঝে মাঝে মনে হয় ছুটে যাই তোমার কাছে। কিন্তু, আমি বন্দি হয়ে আছি নিয়ম কানুন আর কাঁটা তারের শৃঙ্খলে। তোমার আমার মাঝের বিভেদের এই দেওয়ালটা অনেক উঁচু। হয়তঃ এর উচ্চতা বাড়বে বই কমবে না। তবুও আমার সব চেয়ে বেশি দুঃখ কিসে জানো কি তুমি? সেটা হচ্ছে, তোমার কথা নির্দিধায় বলতেও পারিনা ভয়ে। তোমার আমার মাঝে মিলন হয়তঃ আর হবেনা! তবুও তোমার রূপের সৌন্ধর্য, আমাকে মাঝে মাঝে পাগল করে তোলে। নিজের অজান্তে চলে যাই তোমার কাছে। আমি এখনও যেন দেখতে পাই তোমার সেই সৌন্ধর্যকে অন্তরে অন্তরে। তবে জানি, এখন আর হয়তঃ আমি তোমাকে চিনতে পারবনা। বিবর্তন ও পরিবর্তনে এক সময়ের রূপ হারিয়া যায় কালের করাল গ্রাসে। তবুও আজকের তোমাকে চিনতে নাপারলেও আমার সেই পুরানো স্মৃতিকে বার বার মন্থন করে তৃপ্তি পেতে চাই। কারণ, তোমার রূপ রসইতো আমাকে তৈরী করছে হে প্রিয়, হে মোর জন্মভূমি, হে মোর বঙ্গভূমি।
আবেগিক বুদ্ধি বাড়ানোর কৌশল
জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে আমরা ভিন্ন ভিন্ন অভিঙ্গতার
সম্মূখীন হই I কিছু অভিঙ্গতা এমন আছে যা আমাদের
মস্তিষ্কে ভাল অনুভূতির সৃষ্টি করে I যার ফলে আমরা আনন্দিত হই , সুখী অনুভব করি I অন্যদিকে খারাপ আর
বাজে অভিঙ্গতা গুল মস্তিষ্কে বাজে অনুভূতির সৃষ্টি করে I এবং আমরা অসুখী হয়ে
পড়ি I
আমাদের বর্তমান অবস্থা আমাদের চিন্তা আর অনুভূতির সমষ্টি I আমরা আমাদের চিন্তা
বদলে ফেললে , অনুভূতি বদলে যাবে I আমরা আমাদের
অনুভূতিকে বদলে এই মুহুর্তে সুখী অথবা অসুখী হতে পারি I
যে ব্যাক্তি তার জীবন কে যত সহজ ভাবে নির্বাহ করে সে ব্যাক্তি তত বেশি
সুখী I জীবন কে সুখী করতে হলে আমাদের বুঝতে হবে কোন জিনিস গুল আমাদের মাঝে
সুখ বয়ে আনে , আবার কোনগুল টেনশন সৃষ্টি করে I আমাদের জীবনকে আমরা
নিজেদের মত করে সাজাতে পারি I যে অভিঙ্গতা গুল আমাদের সুখী করে সেগুল
দিয়ে জীবন কে সাজাতে পারি, এবং যেগুল সুখ বিনষ্ট কারী সেগুল পাশ কাটিয়ে চলে
যেতে পারি I
এই শতাব্দীর রহস্যপূর্ন কিছু গল্পের মধ্যে এই গল্পটি অন্যতম ...........
পৃথিবী যখন ঊৎকর্ষের চরম সীমায় পৌছে যাচ্ছে , মানুষের সৃষ্টিশীল
চেতনা বাড়ছে | এই সময়ের দিকে দুইজন মধ্য বয়স্ক লোক ভাবছে কীভাবে
তারা এই পৃথিবীটাকে আর সুন্দর এবং শান্তিময় করে তুলতে পারে ? তারা দুইজন তাদের
ভাবনা অনুসারে কাজ শুরু করল I কিছুদিন চলার পর প্রথমজন বেশ কিছু কাজ করল
এবং তার জন্য বেশ প্রশংসা ও পেল I অপর দিকে দ্বিতীয়জন আরও কিছুটা বেশি
গ্রহনযোগ্যতা এবং প্রশংসা পেল প্রথম ব্যাক্তির থেকেও I এভাবে কিছুদিন কাটতে
লাগল এবং দেখা গেল দ্বিতীয়জন প্রথমজন অপেক্ষা বেশি সফল ও এবং প্রশংসা পাচ্ছে I এটা দেখে প্রথমজনের
মনে একটা প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হল I এবং মনে মনে সে দ্বিতীয় ব্যাক্তি অপেক্ষা
বেশি প্রশংসা পাবার বাসনা লালন করতে লাগল I এবং এভাবে আরও কিছুদিন সময় অতিবাহিত হবার
পর প্রথম ব্যাক্তির মনে বেশি প্রশংসা পাবার বাসনা তীব্র হতে লাগল I আর অদ্ভূদ ভাবে দেখা
গেল সে মনের অজান্তেই দ্বিতীয় ব্যাক্তির দোষ খোজা শুরু করেছে I দোষ খুজতে খুজতে
এবার সে ভাবতে শুরু করল কেন দ্বিতীয় ব্যাক্তি সফল হতে পারবে না ? দিন দিন এ কুচিন্তা
গুল তার মাঝে প্রকট আকার ধারন করল I কিছু বছর পর দেখা গেল প্রথম ব্যাক্তি
কিছুই করতে পারল না I কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাক্তি অনেক এগিয়ে গেছে কারন সে
নিজের উপর অস্থা রেখে এগিয়ে ছিল I
গ্রীসের একজন দার্শনিক আজ থেকে অনেক বছর পূর্বে এই কথা গুল পাথরের গায়
লিখে রেখে ছিল……………………….
আমরা যখন অন্য ব্যাক্তির সফলতা দেখে তার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ি
তখন মূলত আমরা নিজেদের ক্ষতি করি I কিছু কাজ করার পর যখন আমরা ভাল ফলের আশা
করি এবং অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ি তখন আমাদের মাঝে ইগো, ঈর্শ্বা, হিংসা এই প্রবৃত্তি
গুল জেগে ওঠে I
ঈর্শ্বা যখন আমাদের মাঝে প্রকট হয় তখন অন্যের দোষ খোজার
দিকে দৃষ্টি দিয়ে ফেলি I অন্যকে দূর্বল করে দেওয়ার কথা ভাবতে থাকি I এ অবস্থায় আমরা
আমাদের চিন্তাশক্তি অন্যের দোষ খোজায় এবং অন্যকে দূর্বল করে দেওয়ার চিন্তায় ব্যায়
করি I অপরের দোষ নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ভেবে যাই | এভাবে আমাদের
চিন্তাশক্তি ব্যায় করি, আমাদের চিন্তাশক্তি অপচয় করি I নিজেদের মূল্যবান
সময় নষ্ট করি | নিজেদের জীবনের মূল লক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি I যার কারনে, আমাদের ব্যার্থ হবার
সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায় I কাজের ব্যার্থতা আমাদের আরও বিদ্বেষপূর্ন বানিয়ে
ফেলে I জন্ম নেয় নেতিবাচক আবেগ I যেটা আমাদের আরও খারাপ পরিস্থিতিতে নিয়ে
যায় I
ডক্সিন ,
আমরা যার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করি আমরা তাকেই সৃষ্টি করে ফেলি I প্রকৃত পক্ষে আমরা
যদি শুধুমাত্র নেতিবাচক দিকগুলোর দিকে নজর দিই তবে আমরা আমাদের কোন ঊপকারই করতে
পারব না I আমরা যখন অন্যদের দোষ খুজে তাকে ড্যামেজ করে
দেওয়ার কথা ভাবতে থাকি I তখন মূলত আমরা
আমাদের নিজেদের ড্যামেজ করে দিই I
নীড ডোনাল্ড ,
আনন্দ, হাসি, সুখ, ভালবাসা এসবই জীবন I একটা পথ শিশুকে
একবেলা পেট পুরে খেতে দিলে সে আনেক খুসি হয় I আর আমরা শিশুটার
খুসি দেখে আনন্দিত হই I যুগ যুগ ধরে মনিষীরা এই সত্যকে তুলে ধরতে
চেয়েছেন I
একজন দার্শনিক বলেছেন ……………….
তুমি তোমার শত্রুদের কথা ভেবে নিজের মনের সুখ নষ্ট কর না I আমরা যদি শুধু
শান্তি , প্রেম, ভালবাসা এসবের দিকে দৃষ্টি দিই তবে আমাদের
জীবনও সেরকম হয়ে উঠবে I জীবনের খাতা আর কলম আমাদের হাতে আমরা
যেভাবে জীবনের গল্প লিখব জীবন সেরকম হবে I
প্রাচীন গ্রীকদের সময়ে একটা ছেলে বালক বয়সে চাইছিল সে তার জীবনকে হাসি , আনন্দ আর উৎকর্ষতায়
ভরিয়ে রাখবে …….
তাই সে কখনও নেশা জাতীয় খাবার খেত না I কারন এগুল খাবার ফলে
তার জীবনে অনেক খারাপ কিছু অভিঙ্গতা ঘটতে পারত I সে কখনও খারাপ
ছেলেদের সাথে মিশত না কারন খারাপ সঙ্গের সাথে মিশলে তার ও খারাপ হবার সম্ভাবনা ছিল I এসব ঘটনা সে পাশ
কাটিয়ে চলে গিয়েছিল I যাতে এসব বাজে অভিঙ্গতা তার জীবন থেকে মূল্যবান
সময় এবং সম্ভাবনা কেড়ে নিতে না পারে I জীবনে এমন অভিঙ্গতা ঘটতে দেওয়া উচিৎ না
যেটা আমাদেরকে হিংস্র মানুষে পরিনত করে I
জীবনে সেই লাইন কে পাশ কাটিয়ে যাও যা তোমার জীবন
কে হিংস্র বানাতে পারে I
সাইকো
সাইকো
অপরেশ পাল (অনুবাদ)
paart - 3
রুমে তিনটি জীবিত প্রানীর শ্বাসপ্রশ্বাস শোনা যাচ্ছে। একজন চেয়ারে বাঁধা। আরেকজন বাঁধা অবস্থায় ফ্লোরে পরে রয়েছে। চেয়ারে বাধা মেয়েটির নাম নাদিয়া। বয়সটা কমই বলা যায়, মাত্র চব্বিশ। অল্প কিছুদিন হয়েছে সে মিডিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে। ফ্লোরে পরে থাকা মেয়েটির বয়স চার। নাদিয়ার মেয়ে। মেয়েটি না বলেই বাচ্চা বলাটাই মানানসই। কিউট দুধের মত ফর্সা একটা বাচ্চা। ফ্লোরে পরে থাকার কারনে বাচ্চার গাল লাল হয়ে গিয়েছে। রুমের তৃতীয় লোকটি তার হাতের কুড়াল নিয়ে নাদিয়ার সামনে চলে আসলো। ফ্লোরে পরে থাকা বাচ্চার মত সে চেতনাহীন অবস্থায় রয়েছে। চেয়ারের সামনে রাখা এক বালতি পানি নাদিয়ার দিকে ছুড়ে মারলো লোকটি। দ্রুত উঠে বসার চেষ্টা করলো নাদিয়া। কিন্তু বাঁধা থাকার কারনে সেটা সম্ভব হয়ে উঠলো না। চিৎকার দিতে গিয়ে নাদিয়া বুঝতে পারলো তার মুখের ভিতরে কিছু একটি গুঁজে দেওয়া হয়েছে। যার কারনে কোন শব্দ বের করতে পারলো না সে। শুধু কয়েকবার গো গো আওয়াজ বের হলো । নাদিয়া সামান্য সামনে তার মেয়েকে পরে থাকতে দেখলো। কি হচ্ছে এখানে দ্রুত ভেবে যাচ্ছে সে । কুড়াল হাতে লোকটি তার বাচ্চার পাশে এসে দাড়ালো। বাচ্চাটাকে তুলে আনার কোন ইচ্ছে তার ছিলো না। কিন্তু নাদিয়া কে যখন পিছনে থেকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলতে যাবে এমন সময় পিচ্চিটা কোথায় থেকে চলে আসে। হয়তো বাবার কাছে থেকে মায়ের কাছে এসেছিলো। নাদিয়ার স্বামী তখন দোকানে কি যেন কিনছিলো। বাচ্চা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করেনি সে। একেও ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলে নেয়। তারপর এখানে নিয়ে এসেছে। বাচ্চাকে এভভাবে তুলে নিয়ে আসার কোন প্লান তার ছিলো না। কিন্তু বাচ্চা তার চেহারা দেখেছে। রিস্ক নেওয়া যায় না, যতই ছোট হোক না কেন। তবে সেটা নিয়ে এখন লোকটির কোন আপত্তি নেই। এ মূহুর্তে তার মাথায় সুন্দর একটা প্লান এসেছে । বাচ্চার পেট বরাবর লোকটি তার বুট পরা পা দিয়ে গায়ের জোরে লাথি মারলো। বাচ্চা মেয়েটি জ্ঞান কিছুক্ষণ আগে ফিরে এসেছিলো । লাথির প্রচন্ড আঘাতে চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু তার টেপ প্যাঁচানো মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হলো না। পা দিয়েই চার বছরের বাচ্চা মেয়েটির সোজা করলো লোকটি। হাতের কুড়াল টা ষাট ওয়াটের বাল্বের আলোতে চকচক করছে। কপালের একটু উপরে সেটা সে মাপমতো ধরলো। তারপর ধীরেসুস্থে ভারসাম্য রেখে লোকটি নিজের পিছনে কুড়ালটি নিয়ে আসলো। তার দিকে দুই জোড়া চোখ তাকিয়ে রয়েছে। নাদিয়া ও তার চার বছরের বাচ্চা মেয়েটি। নাদিয়া বিশ্বাস করতে পারছে না এটা সত্যিই হতে যাচ্ছে। সত্যিই সামনে দাঁড়ানো অপরিচিত লোকটি তার আদরের বাচ্চাটার মাথা বরাবর কোপ দিতে যাচ্ছে। খট করে শব্দ হলো। কুড়ালটি নামিয়ে এনেছে লোকটি। বাচ্চা মেয়েটির করোটি কেটে ফ্লোরে বাড়ি খেয়েছে কুড়ালটি। নাদিয়া চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। যদিও হালকাভাবে গোঙানি ছাড়া অন্য কোন শব্দ শোনা গেল না। লোকটি সেদিকে কোন ভূরুক্ষেপ করলো না। কুড়াল আবার পিছনে নিয়ে আসলো। আগের বারেব মত গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে বাচ্চার কন্ঠ বরাবর কোপ দিলো। কোপ দেওয়ার সাথে সাথে মাথাটা ছিটকে দূরে চলে গেল। লোকটি হাতের কুড়াল ফ্লোরে রেখে দিলো একপাশে রাখা একটা মাঝারি আকারের স্টিলের চেয়ার টেনে নাদিয়ার সামনে নিয়ে আসলো। টেবিলের উপর কয়েক ধরনের ছুরি, চাপাতি, কাচি, বড়সর কিছু লোহার পেরেক আর হাতুড়ি গুছিয়ে রাখলো। এরমধ্যে নাদিয়ার জ্ঞান ফিরে এসেছে। সে তাকিয়ে তার মাথাহীন বাচ্চার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তার চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পরেছে। নাদিয়ায় জ্ঞান ফিরে আসায় সবথেকে বেশি খুশি হয়েছে লোকটি। রুমের এক কোনায় পরে থাকা নাদিয়ার বাচ্চার মাথা সে তুলে নিলো। আর সেটা তুলে নিয়ে ঠিক নাদিয়ার সামনে রাখা স্টিলের টেবিলের উপর রাখলো। নিঃশব্দ অট্টহাসি হাসছে লোকটি। পরিস্থিতি খুব মজার লাগছে কিনা তার কাছে। বাচ্চার মুখটা ঘুরিয়ে নাদিয়ার দিকে ফিরিয়ে দিলো সে। মাথার করোটি কাটার কারনে মস্তিষ্ক বের হয়ে আছে। অবশ্য ফ্লোরে ছিটকে পরার কারনে কিছু অংশ নষ্ট হয়ে মস্তিষ্কের আসল আকার হারিয়ে ফেলছে। বাচ্চা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে রয়েছে। মুখে টেপ পেচানোর কারনে নিচের অংশের কোন পরিবর্তন নেই। শুধু রক্তাক্ত কন্ঠনালী বাদে। - বাবু স্মাইল দেও তোমার আম্মুকে। ওহো তোমার মুখ তো বাধা। সরি ভুল হইছে আমার। কথা বলে এই প্রথম জোরেশোরে হাসতে শুরু করলো লোকটি। ভয়ানক এক হাসি। মাথাটা ঘুরিয়ে নিজের দিকে তাক করলো লোকটি। বাচ্চার মাথা নিয়ে তার প্লানটা বাস্তবায়ন করতে হবে। হাতে একটা স্ক্রু ড্রাইভার তুলে নিলো সে। খচ করে বাচ্চার ডান চোখে সেটা গেথে দিলো। হালকা মোচড় দিতেই চোখের অক্ষিগোলক সহ স্ক্র ড্রাইভার চলে আসলো। নাদিয়ার কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না । তার কান্নাও বহু আগে থেমে গিয়েছে। সে শুধু তাকিয়ে দেখছে। কারন এছাড়া তার করার কিছু নেই। এই অল্প সময়ের মধ্যে সে এই নির্মম সত্য বুঝতে পেরেছে। স্ক্রু ড্রাইভারের মাথা দিয়ে চোখটা হাতে নিলো লোকটি। একবার নাদিয়ার দিকে তাকালো তারপর হাতের চোখের দিকে। গপ করে মুখে সেটা পুরে দিলো সে । কোন কথা না বলে পাঁচ মিনিট চাবিয়ে সেটা গিলে ফেললো চোখটি । আবার কথা বললো লোকটি, বাচ্চাটা দেখতে কত সুইট কিন্তু ওর চোখ এত বাজে স্বাদের কেন ? কথাটা নাদিয়ার উদ্যেশ্যে বলছিলো যদিও লোকটি। তবে কোন উত্তর আশা করেনি। কয়েকবার ভাবার পর সে সিদ্ধান্ত নিলো না অপর চোখ খাবে না। তবে হাতে সে একটা চামচ তুলে নিয়েছে এবার। মিডিয়াম সাইজের চা চামচ। চামচ টা বাচ্চা মস্তিষ্কের মধ্যে ডুবিয়ে দিলো সে। চামচটা যখন তুললো তখন সেখানে মস্তিষ্ক উঠি এসেছিলো। কয়েক চামচ খাওয়া পর লোকটি বুঝতে পারলো এটাও মজার না। একটা পলিথিন আর মোটা কাগজের বক্স সে নিয়ে আসলো। টেবিলে রাখলো না সেগুলো। একটু দূরে ফ্লোরে রাখলো। কারন সে কোনভাবেই চায় না রক্ত প্যাকেটে লেগে থাকুক। হাতে ছুরি নিয়ে বাচ্চা বাম গালে কাটাকাটি শুরু করলো সে। গভীর করে কাঁটতে শুরু করলো সে। হাতে দুইটা ছোট সাইজের মোটামুটি চিকন স্টিলের রড বাচ্চার ডান চোখের গর্তের মধ্যে গেথে দিলো। - পারফেক্ট। উচ্ছ্বাস ঝরে পরলো লোকটির কন্ঠ থেকে। কিছুক্ষণের জন্য অন্যরুমে গিয়ে ক্যানভাস, কালার আর ছবি আঁকার অন্য সরঞ্জাম নিয়ে আসলো সে। প্রথমে ফ্লোরে একটা পেন্টাগ্রাম আঁকলো। তিনটা কালো রংয়ের মোম সেট করলো সেখানে। প্রতিটি মোম অন্যটা থেকে সমান দূরে অবস্থিত। পেন্টাগ্রামের ঠিক মাঝে নাদিয়ার বাচ্চার মাথাটা সে রাখলো। লোকটি ব্লাক মাজিকে বিশ্বাস করে না। তবে এমন একটা মডেল সবসময়ই তৈরি করা যায় না। তাছাড়া তার ছবি আঁকার অভ্যাস আছে। তো সে কিভাবে এরকম দূর্লভ মডেলের ছবি না আর্ট করে পারে ?
ইমা এখনো আছি তোমার প্রতীক্ষায়
ইমা এখনো আছি তোমার প্রতীক্ষায় |||
আজম মোহাম্মদ
সেদিন ইমার কোমল হাত ছুঁয়ে হাঁটার সুভাগ্য
হয়েছিলো । আমরা দুজন পদচিহ্ন
এঁকে দিচ্ছিলাম বালির বুকে । একপাশে ছিলো
সমুদ্রের বিষাদী কল্লোল । অন্য পাশে সবুজের
প্রতীক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঝাউবন। সেদিন আমরা বিষাদের কোনো উপত্যকায় ছিলাম না । হঠাৎ ইমাকে প্রশ্ন করলাম……..
ইমা দেখছো ?
আজিব!আমি অন্ধ নাকি ?
না না।কিছু বলবো ?
গাধা! বলো। কি বলতে চাও।
ওই যে, ওখানে ঢেউয়ের তালে
তালে দোলিত যে ছোট্ট নৌকোটা ডুবুডুবু ওটার মতো যদি আমি ঢেউয়ের কাছে পরাজিত হয় কখনো ?
সেকি কবি হতে শিখেছো কবে ? মুচকি হেসে
ইমা বলোনা, প্লিজ ।
কি করবো আর। ডুবুরী হয়ে সমুদ্রের তলদেশে বিচরণ করবো আমার মুক্তা আহরণ
করার জন্যে।
তাই নাকি ?
আর কিছু বললাম না।বললে যে ইমা রেগে যাবে তা জানতাম। আমরা এখন ঝাউবনের কচি কচি বৃক্ষরাজি ফাঁক করে হাঁটছি। এবার আমি আস্তে করে হাত ছাড়িয়ে নিলাম।
হাত ছাড়লে যে ?
না, এমনিতেই। আরো একটু হাঁটলাম।হঠাৎ থেমে গেলাম আমি। ইমা আনমনে এগিয়ে যাচ্ছে। সে একাকীত্ব অনুভব করার সাথে সাথেই ফিরে
তাকালো। এবার আমি জোরে জোরে হাঁটছি। ওর কাছে যেতেই শুনতে হলো অনুরাগের তপ্ত বাক্য। কিছু বললাম না।তারপর ………….. তখনো সন্ধ্যা নামেনি। তবু পাখিরা দল বেঁধে
নীড়ে ফিরছে। সূর্যটা ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। তখনো হাঁটছি আমরা।
আচ্ছা ইমা, ধরো, চলার পথে আমাকে হঠাৎ থেমে যেতে হলো।তখন তুমি কি
করবে ?
কি করবো মানে ? হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যাবো । (গম্ভীর মুখেই বললো) আমি কিছু বললাম না
অনেকক্ষণ । হঠাৎ হাত ধরে টান দিয়ে বললো
ওদিকে যাচ্ছো কোথায় ? দেখছো না, ওদিকে পানির কত বড়ো কূয়ো। ইমার হাতের ছোঁয়ায় আমি নিজেকে ফিরে পেলাম।
ইমা চলো ফিরে যাই।
চলো।আচ্ছা তুমি কি ভাবছিলে আমি এই উত্তর দিবো "আমিও তোমার সাথে
থেমে যাবো। "?
কেন জানতো চাইছো এখন।
গাধা! যদি তাই বলতাম,তবে খুব খুশি হতে বুঝি! অথচ আমি তোমাকে
যেভাবে কল্পনায় অনুভব করি তার চেয়ে আমার প্রানে, রক্তে, শিরা-উপশিরায় বেশি অনুভব করি তোমার
উপস্থিতি। এখন নিজের উপর ঘৃণা জন্মালো।তখনি অবুঝ বালকের
মতোই প্রশ্ন করলাম…….
ইমা, এত ভালোবাসো আমায় ?
না ঘৃণা করি।হাসতে হাসতে অকপটে বলে ফেললো। কিন্তু আমি জানি ওর
হাসির গভীরতায় কি লুকিয়ে আছে।ততক্ষনে আমরা রাস্তার কাছাকাছি চলে এসেছি।এভাবেই চলতে
লাগলো………… অতঃপর………….শুনলাম সে নাকি নিরবকে নিয়ে বেশ সুখেই আছে। জানতাম ভালবাসা এমনি হয়।যখন আষাঢ়-শ্রাবণে ঘোর বরষা নামে তখন প্রথম প্রথম ঝুম বৃষ্টি হলেও আস্তে আস্তে তার মাত্রা কমে আসে।শেষ অবধি
থেমে যায়। আশার কথা হলো ঐ একি আকাশ হতে আবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।কিন্তু
প্রথম যাকে ভালবাসা যায়,তার থেকে যে ভালবাসা পাওয়া যায় তা আর কারো কাছে
পাওয়া যায়না।তাই আমি এখনো আছি ইমা তোমার প্রতীক্ষায়। তুমি আসবেনা আমি
জানি। এতদিনে হয়ত বদলে গেছো অনেকখানি। অপেক্ষা করছি
অবুঝের মতো । তবে কোনো ধোঁয়াটে নিকষ কালো রাতের বুকে ক্ষীণ আলো
জ্বালিয়ে সিগারেটের বাক্স হাতে নয়। কেননা, একটা সিগারেটের কিছু
বিষাক্ত ধোঁয়া আমার বিষাদকে মধুময় করতে পারবেনা।
Subscribe to:
Posts
(
Atom
)
জনপ্রিয় পোষ্ট
-
.সৃজনশীল মানে আপন সৃষ্টি. সৃজন শব্দের অর্থ হলো সৃষ্টি , আর শীল শব্দের অর্থ হলো নিজ। অর্থাৎ সৃজনশীল শব্দের সম্...
-
আত্মহত্যা - সাময়িক সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান তাকভির হাসান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মৃ...
-
প্রিয়া জগদীশচন্দ্র রায় Unversity of Calcutta তুমি কেমন আছো? সুদীর্ঘ ত্রিশ বছর হ’ল তোমাকে ছেড়ে এসেছি। আর এই ত্রিশ বছরে আমি বাধ্য হয়ে...
-
1 . আমরা যারা প্রাইমারি স্কুল পার করে , মাধ্যমিক , উচ্চ মাধ্যমিক পেরিয়ে কলেজে বা চাকরিতে আছি বা বসে আছি তাদের নিশ্চয় ...